Tags: এক্সপ্রেস, কলকাতা, খুলনা, ট্রেন, ঢাকা, তালিকা, নিউ জলপাইগুড়ি, বন্ধন, বাংলাদেশ, ভারত, ভাড়া, মিতালী, মৈত্রী, শিলিগুড়ি
ডেস্ক রিপোর্ট : করোনা মহামারির কারণে প্রায় দুই বছর ধরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। আগামী ২৯ মে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে দুই দেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত এ আরামদায়ক বাহন। এছাড়া মিতালী এক্সপ্রেস যাত্রী পরিবহন করবে ১ জুন থেকে।
দেশে করোনা মহামারী দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। করোনা মহামারীর ভিতর এক বছর পর মিতালী এক্সপ্রেস উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের সময় দুই দেশেই করোনার প্রকোপ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তাই তখন যাত্রী পরিবহন বন্ধ ছিল মিতালী এক্সপ্রেসের। এখন ভারত-বাংলাদেশে সহ সারা বিশ্বেই করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তাই সম্প্রতি এই তিনটি রুটে যাত্রী পরিবহনে বাংলাদেশ রেলওয়েকে চিঠি দিয়েছে ভারত সরকার।
মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে কলকাতার মধ্যে চলাচল করবে। বন্ধন চলবে খুলনা-কলকাতা রুটে। আর মিতালী এক্সপ্রেস ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি রুটে চলবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, ভারতের সাথে তিনটি পথে ট্রেন চালুর প্রস্তুতি চলছে। প্রথমদিন বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ট্রেন (রেক) দিয়ে কলকাতা-ঢাকা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু হবে। কলকাতা থেকে খুলনা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস আসবে ভারতীয় রেলের একটি ট্রেন নিয়ে। মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকার পথে আসবে ভারতের ট্রেন নিয়ে। তবে ভারতীয় সরকারের প্রটোকল অনুসারে ভ্রমণকারীকে যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে আরটিপিসিআর কোভিড টেস্ট রিপোর্ট কিংবা দুই ডোজ কোভিড টিকা গ্রহণের সনদ থাকতে হবে। বাংলাদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোভিড প্রটোকল ভারতের প্রটোকলের মতোই।
২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই রেলপথের দূরত্ব ৫৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারত অংশে ৮৪ কিলোমিটার। বাংলাদেশ অংশে ৪৪৬ কিলোমিটার।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে সোম ও বৃহস্পতিবার মিতালী এক্সপ্রেস ছেড়ে যাবে। ঢাকা থেকে ছাড়বে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে, ভারতে পৌঁছাবে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে। ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছাড়বে রবি ও বুধবার। ট্রেনটি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছাড়বে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছাবে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে।
এই পথের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি চেয়ার ২ হাজার ৭৮০ টাকা, এসি সিট ৩ হাজার ৪২০ টাকা এবং এসি বার্থ ৫ হাজার ২৫৫ টাকা। ট্রেনটিতে চিলাহাটি স্টেশন থেকেও যাত্রীরা ওঠানামা করতে পারবেন। মৈত্রী, বন্ধন, মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের আয় ভাগাভাগি করে নেবে বাংলাদেশ ও ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। মৈত্রী এক্সপ্রেসের ৭৫ শতাংশ আয় পায় বাংলাদেশ, ২৫ শতাংশ যায় ভারতে। বন্ধন এক্সপ্রেসের আয় ৫০ শতাংশ করে দুই দেশের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। আর মিতালী এক্সপ্রেস চালু হলে আয়ের ৮০ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ। ২০ শতাংশ পাবে ভারতীয় রেলওয়ে।
২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু হয়। ট্রেনটি সপ্তাহে চারদিন (বুধবার, শুক্রবার, শনিবার এবং রোববার) ঢাকা থেকে কলকাতা যায়। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল সোয়া ৮টায় ছেড়ে কলকাতা চিতপুর স্টেশনে পৌঁছায় বিকেল ৪টায়। কলকাতা থেকে ঢাকা আসে সপ্তাহে চারদিন (সোমবার, মঙ্গলবার, শুক্রবার এবং শনিবার)। কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছায় বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হয়। এটি খুলনা-কলকাতা রুটে সপ্তাহে দুদিন (রোববার ও বৃহস্পতিবার) চলাচল করবে। ট্রেনটিতে এসি সিট ও এসি চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে। খুলনা-কলকাতার এসি সিটের ভাড়া ২ হাজার ৫৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৫৩৫ টাকা। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের ভাড়া হবে মূল ভাড়ার ৫০ শতাংশ।