Tags: ওয়ানডেতে শক্তিশালী, ক্যারিবীয়রা, না, পাত্তাই, পেলো, বাংলাদেশ
ওয়ানডেতে শক্তিশালী বাংলাদেশ, পাত্তাই পেলো না ক্যারিবীয়রা
স্পোর্টস ডেস্ক: ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ সবসময়ই ভালো দল, আরও একবার মাঠের খেলায় প্রমাণ করে দিল বাংলাদেশ দল। টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ধরাশায়ী হওয়া টাইগাররা ওয়ানডেতে করেছে দুর্দান্ত সূচনা।
গায়ানায় কার্টেল ওভারের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৬ উইকেট আর ৫৫ বল হাতে রেখে হেসে খেলেই হারিয়েছে তামিম ইকবালের দল। এতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ । টানা সর্বোচ্চ নিয়ে সর্বশেষ ৯ ওয়ানডেতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালো বাংলাদেশ।
৪১ ওভারে ১৫০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় টাইগাররা। ক্যারিবীয় স্পিনার আকিল হোসেনের একটি বল লিটনের পায়ে লাগলে আবেদন হয়।
আম্পায়ার শুরুতে আউট দেননি। অনেকটা সময় নেন। লিটন ভেবেছিলেন বেঁচে গেছেন। এমন সময়ে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নেন লিটন।
রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লেগ স্ট্যাম্প একটু ছুঁয়েছে, তবে বেশিরভাগই বাইরের দিকে। কিন্তু আম্পায়ার্স কলে আউট হয়েই সাজঘরে ফিরতে হয় লিটনকে । পরে আম্পায়ারের সঙ্গে কিছু সময় কথা বলেন তামিম।
লিটন ফিরলেও তামিম দানবীয় রুপ নিয়েছিলেন ব্যাটিংয়ে। সপ্তম ওভারে জেইডেন সিলসকে একটি চার আর ছক্কা হাঁকানো টাইগার দলপতিকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল ক্যারিবীয়রা।
পরবর্তীতে তামিম ইকবাল রান আউট হন। ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় তামিমের ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংসের সমাপ্তি সেখানেই।
এরপরথেকেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর শান্ত মিলে দলকে সহজ জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। শান্ত খেলছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। ৭১ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়ে ফেরেন তিনি। গুদাকেশ মোদিকে অভিষেকে প্রথম উইকেটের স্বাদ দিয়ে মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দেন শান্ত। ৪৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে গড়া তার ইনিংসটি ছিল ৩৭ রানের।
আফিফ হোসেনও শুরুটা করেছিলেন ভালো। কিন্তু ৯ রান করে বাজে শট খেলে নিকোলাস পুরানকে উইকেট উপহার দেন তিনি। তবে বাকি সময়টায় দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি মাহমুদউল্লাহ আর নুরুল হাসান সোহান।
৫৩ বলে ৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তারা। মাহমুদউল্লাহ ৬৯ বলে ৪১ আর সোহান ২৭ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে শরিফুল-মিরাজদের তোপে ৯ উইকেটে ১৪৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এই ম্যাচে দেশের ১৩৮তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্যাপ পেয়েছেন এরই মধ্যে ২২টি কুড়ি ওভারের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। তার হাতেই প্রথম ওভার তুলে দেন তামিম ইকবাল।
বাঁহাতি ব্যাটার কাইল মায়ার্সের বিপক্ষে প্রথম ওভারে কোনো রান খরচ করেননি নাসুম। তবে একটি ওয়াইড বল করায় প্রথম ওভারটি মেইডেন পাননি তিনি। নাসুমের দারুণ ওভারের পর দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান।
এ বাঁহাতি পেসারের প্রথম বলটি ছিল মিডল স্টাম্পের ওপর ইনসুইঙ্গার। যা খেলতে গিয়ে পুরোপুরি পরাস্ত শাই হোপ (০)। তার ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে বল আঘাত হানে স্টাম্পে। বাংলাদেশ পায় প্রথম সাফল্য।
সেই চাপ পরে ধরে রাখেন তাসকিন, মিরাজরাও। হাত খুলে খেলতে পারেননি ক্যারিবীয় ব্যাটাররা। প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৩০ রান তুলতে পারে স্বাগতিক দল।
কাইল মায়ার্স আর শামারাহ ব্রুকস শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে ৬১ বল খেলে ৩১ রানের ধীরগতির জুটি গড়েন তারা।
১২তম ওভারে এই জুটিটি ভাঙেন মেহেদি হাসান মিরাজ। মায়ার্স আউট হন ২৭ বলে ১০ করে। ২১তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন শরিফুল।
বাঁহাতি এই পেসারকে তুলে মারতে গিয়ে মিডঅফে বদলি ফিল্ডার এনামুল হক বিজয়ের ক্যাচ হন রান নিতে গলদঘর্ম হওয়া ব্রেন্ডন কিং (৩১ বলে ৮)।
এর মধ্যে ঘটে আরেক ঘটনা। পুরান রানের জন্য দৌড় দিলে স্ট্রাইকিং এন্ডে স্টাম্প ভেঙেছিলেন নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু আম্পায়ারের আউটই বাঁচিয়ে দেয় ১৫ রানে থাকা পুরানকে।
রিভিউ নেন তিনি, তাতে দেখা যায় স্টাম্প মিস করে যেতো বল। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী বল ডেড হয়ে যাওয়ায়, পরে আর রানআউটটি ধরা হয়নি।
পরের ওভারেই তাকে বোল্ড করে দেন মিরাজ। ২৪ বলে ১৮ রান করে সাজঘরে ফেরত যান ক্যারিবীয় এই মারকুটে ব্যাটার। এরপর আকিল হোসেন মিরাজের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হলে একশর আগেই (৯৬ রানে) ৭ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে ১১০ রানে ক্যারিবীয়দের ৯ উইকেট তুলে নিয়েও স্বস্তিতে শেষ করতে পারেনি টাইগার বোলাররা। বেশ কয়েকটি ক্যাচ ড্রপের সুবিধা নিয়ে শেষ উইকেট জুটিতে ৪৫ বলে ৩৯ রান তুলে দেন অ্যান্ডারসন ফিলিপ আর জেইডেন সিলস।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল শরিফুল ইসলাম। ৮ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ৪টি উইকেট শিকার তার। ৩৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। একটি উইকেট শিকার মোস্তাফিজুর রহমানের।
অভিষিক্ত নাসুম আহমেদ উইকেট না পেলেও ৮ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করেন। তাসকিন সমান ওভারে দেন ২৫।